এশিয়ান গেমস ও সাফ ফুটবলের ম্যাচ অনুশীলনের জন্য সহজ প্রতিপক্ষ বেছে নিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল দল।
কথায় আছে, কঠিন অনুশীলন, সহজ পরীক্ষা। বাংলাদেশ ফুটবল সে কথার ধার ধারছে না। না হলে কি আর কঠিন পরীক্ষার জন্য সহজ প্রস্তুতি বেছে নেওয়া! এশিয়ান গেমস ও সাফ ফুটবলের জন্য যে দলগুলোর সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলছে বাংলাদেশ, প্রতিপক্ষ দলগুলোর মান নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। কাতারের দ্বিতীয় বিভাগের একটি দ্বিতীয় সারির দলের পর এবার কোরিয়ায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় দলের সঙ্গে অনুশীলন ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল।
সাফ ফুটবল ও এশিয়ান গেমস প্রস্তুতির জন্য চেষ্টার কোনো কমতি নেই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের। কাতারে দুই সপ্তাহের ক্যাম্পের পর অনুশীলন ও প্রস্তুতি ম্যাচের জন্য বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থান করছে বাংলাদেশ জাতীয় দল। অনুশীলন তো হচ্ছে, কিন্তু ম্যাচ অনুশীলন আর হলো কোথায়!
অস্ট্রেলিয়ান কোচ অ্যান্ড্রু ওর্ডের বিদায়ের পর জুনের মাঝামাঝিতে বাংলাদেশের হাল ধরেছে ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে। তাঁর অধীনে কাতারে দুই সপ্তাহের অনুশীলনের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে মাত্র একটি। তাও এখন আবার শোনা যাচ্ছে প্রতিপক্ষ কাতারের আল মেজাইমি দলটা ছিল খুবই নিম্নমানের। দলটি এমনিতে দ্বিতীয় বিভাগের, তাও আবার মূল দল নয়।
শোনা গিয়েছিল, দক্ষিণ কোরিয়ায় হবে আসল অনুশীলন। সেখানে কঠিন প্রতিপক্ষ দলের সঙ্গে তিন-চারটা ম্যাচ খেলিয়ে এশিয়াড ও সাফের জন্য তৈরি করা হবে দল। কিন্তু কিসের কী, সূচি অনুযায়ী বাংলাদেশ কোরিয়ায় যে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে, তার মধ্যে একটি দল আছে শিনহান বিশ্ববিদ্যালয়। জাতীয় দল বড় টুর্নামেন্টের আগে প্রস্তুতি নেবে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শৌখিন দলের সঙ্গে খেলে। ভাবা যায়!
শিনহান বিশ্ববিদ্যালয় এমনই একটি দল, যাদের কোরিয়ার অ্যামেচার কিংবা কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয় ফুটবলের ওয়েবসাইটেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমন দলের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে কীভাবে এশিয়াড বা সাফে ভালো করার আশা করে বাংলাদেশ? প্রশ্নটা করা হয়েছিল জাতীয় দলের কোচ জেমি ডেকে। বাংলাদেশের এই ব্রিটিশ কোচ যেন পাশ কাটিয়ে গেলেন, ‘আমি শুধু আমার দল নিয়েই ভাবছি। প্রতিপক্ষ কারা, তা নিয়ে ভাবতে চাই না।’ আসলে ম্যাচ আয়োজন করার দায়িত্ব তো তাঁর নয়। ডের আর কীই-বা বলার থাকে!
এশিয়াডে বাংলাদেশের গ্রুপে আছে শক্তিশালী উজবেকিস্তান, কাতার ও থাইল্যান্ড। আর সাফে বাংলাদেশের সঙ্গী পাকিস্তান, নেপাল ও ভুটান। সাফে বাংলাদেশের গ্রুপ পর্বের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান চারটি অনুশীলন ম্যাচের জন্য এখন বাহরাইনে এবং প্রতিপক্ষ দলগুলোও প্রিমিয়ার লিগের। তাই প্রশ্নটি এসেই যায়, প্রায় দুই বছর নিষেধাজ্ঞা থেকে ফিরে পাকিস্তান যদি শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সঙ্গে অনুশীলন ম্যাচের আয়োজন করতে পারে, বাংলাদেশ কেন পারবে না?